কীভাবে হস্তমৈথুনের প্রবল আকাঙ্ক্ষা নিয়ন্ত্রণ করা যায়?

কীভাবে হস্তমৈথুনের প্রবল আকাঙ্ক্ষা নিয়ন্ত্রণ করা যায়?

হস্তমৈথুনের আকাঙ্ক্ষা নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে তিনটি পদ্ধতি অনুসরণ করা যেতে পারে:

১) হস্তমৈথুনের প্ররোচনা এড়িয়ে চলা।

২) অন্য কিছুতে ব্যস্ত হয়ে যাওয়া।

৩) ঘুম নিয়ন্ত্রণে আনা।

১) হস্তমৈথুনের প্ররোচনা এড়িয়ে চলা

  • কোন জিনিসগুলো আপনার জন্য হস্তমৈথুনের প্ররোচনা বা ট্রিগার (trigger) হিসেবে কাজ করে, সেগুলোর একটি তালিকা তৈরি করুন। হতে পারে কোনো চিন্তা, অনুভূতি, কাজ, অশ্লীল দৃশ্য, আচরণ, কোনো নির্দিষ্ট পরিস্থিতি বা পরিবেশ । আপনি যদি এই ট্রিগারগুলো থেকে দূরে থাকতে পারেন, তাহলে হস্তমৈথুন ছাড়াও আপনার জন্য অনেক সহজ হয়ে যাবে।
  • ট্রিগারগুলোর তালিকা করতে পারেন আপনার ডায়েরি বা পিসিতে। লেখাগুলো এমন জায়গায় রাখবেন যাতে কেউ খুঁজে না পায়। এই তালিকায় থাকতে পারে: মুভির সফটকোর সিন, সেক্স ফ্যান্টাসি, চটি বই, অধিক মানসিক চাপ (স্ট্রেস), দুশ্চিন্তা, অনিদ্রা ইত্যাদি।
  • পর্ন সম্পর্কিত যেকোনো জিনিস থেকে দূরে থাকুন। যেমন: সিডি, ডিভিডি, ম্যাগাজিন, বই, ছবি, উপন্যাস, কোনো নির্দিষ্ট জায়গা বা পরিবেশ, কারও সঙ্গ।
  • আপনার আশেপাশে যদি এমন কোনো অবজেক্ট থাকে যা আপনাকে উত্তেজিত করে তা সরিয়ে ফেলুন।
  • ইন্টারনেটের ব্যবহার কমিয়ে দিন। আপনার মোবাইল, পিসিতে পর্ন ব্লকার সফটওয়্যার ব্যবহার করুন। পর্ন ব্লক সফটওয়্যারে কাজ না হলে পিসি এমন জায়গায় রাখুন যেখানে বসে কাজ করলে আপনার বাসার সবাই দেখতে পাবে। প্রয়োজনে স্মার্টফোন ব্যবহার বন্ধ করে যেসব মোবাইলে ইন্টারনেট ব্যবহার করা যায় না সেসব মোবাইল ব্যবহার করুন। মনে রাখবেন, জীবনে ভালো কিছু অর্জন করতে চাইলে আপনাকে কিছু ত্যাগ করতে হবে।

২) অন্য কিছুতে ব্যস্ত হওয়া

  • অন্য কিছু করুন। নিজেকে যত সম্ভব ব্যস্ত রাখার চেষ্টা করুন। এমন কিছুতে মনোযোগ দিন যা আপনার মনকে দূষিত চিন্তা থেকে মুক্ত রাখবে। যেমন: নামায পড়া, সাইকেল চালানো, ঘুরতে যাওয়া, খেলাধুলা করা, গল্প করা, বই পড়া ইত্যাদি।
  • আপনার দায়িত্বের প্রতি মনোযোগী হন। হস্তমৈথুনের মতো ক্ষতিকর কাজ ছেড়ে যে কাজগুলো আমাদের জীবনে প্রয়োজন (পড়ালেখা, জীবিকা উপার্জন, পরিবারের সদস্যদের খেয়াল রাখা) সেসব কাজ করতে পারেন। আপনি অলস সময় যত কম কাটাবেন, হস্তমৈথুন করার সুযোগও তত কম পাবেন। আর সময় না পেলে আপনি তা করবেন না।
  • প্রাত্যহিক জীবনকে একটি রুটিনের মধ্যে নিয়ে আসুন। রুটিনটি আপনার হাতের কাছে রাখুন। হস্তমৈথুনের চিন্তা আসলেই আপনার রুটিনের দিকে খেয়াল করুন। ভাবুন এখন আপনার কী করার কথা আর এখন আপনি কী করছেন। মুহূর্তেই আপনি নিজের চিন্তা পরিবর্তন করে রুটিনে উল্লেখিত কাজে মনোনিবেশ করতে পারেন। ধারাবাহিকভাবে এক একটা কাজ করে যান। আপনার সময় পার হয়ে যাবে।
  • আপনার আশেপাশের পরিবেশ বদলান। কখনো কখনো চারপাশের পরিবেশ পরিস্থিতি আপনাকে উত্তেজিত করে তুলতে পারে (যেমন একা থাকা)। এমন অবস্থায় আপনি পাবলিক প্লেসে চলে যান। পরিবারের সদস্য বা বন্ধুদের সাথে সময় কাটিয়েও আপনি এই তাড়না থেকে মুক্ত থাকতে পারেন।
  • এক্সারসাইজ করুন। এক্সারসাইজ যৌন আকাঙ্ক্ষা কমায়। ব্রেইনে এন্ড্ররফিন নামক হরমোন নির্গত করে। এটি আপনাকে আনন্দের অনুভুতি দেবে। আপনি স্ট্রেস থেকে মুক্তি পাবেন।
  • হস্তমৈথুনের কুপ্রভাবগুলো নিয়ে ভাবুন। এই ভাবনা আপনাকে এ জঘন্য কাজ করা থেকে বিরত রাখবে। হস্তমৈথুনের কিছু কুফল- দুর্বল যৌন ক্রিয়া, হতাশা, সম্পর্কের অবনতি, উচ্চ রক্তচাপ, প্রোস্টেট গ্রন্থি স্ফীত হয়ে যাওয়া বা ব্যথা হওয়া।
  • নিজেকে সংযত রাখুন। আপনি যদি সত্যিই হস্তমৈথুনের মতো বদভ্যাস থেকে মুক্তি পেতে চান, তাহলে আপনাকে অবশ্যই নিজের ওপর নিয়ন্ত্রণ আনতে হবে। যখনই হস্তমৈথুনের ইচ্ছা জাগবে তখনি তা প্রতিহত করুন। ইচ্ছার বিরুদ্ধে যুদ্ধে করে যান।

৩) ঘুম নিয়ন্ত্রণে আনা

  • শুধু ঘুমানোর জন্যই বিছানায় শোবেন। যেহেতু বেডরুমে আপনার সম্পূর্ণ প্রাইভেসি আছে, সেখানে বিছানায় শোয়ার সময় মাথায় খারাপ চিন্তা আসতে পারে। এটা অস্বাভাবিক কিছু না। এমন পরিস্থিতি যেন না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
  • সবসময় খাটে শুয়ে থাকবেন না। পড়া, টিভি দেখা বা কম্পিউটার চালানোর সময় খাটে শোবেন না।
  • দিনের সময়টা দাঁড়িয়ে বা বসে কাজ করুন।
  • আপনার মূত্রথলি খালি রাখার চেষ্টা করুন। তীব্র প্রকৃতির ডাকও আপনাকে উত্তেজিত করে তুলতে পারে। তাই ঘুমানোর আগে ও ঘুম থেকে উঠার পর প্রাকৃতিক প্রয়োজন পূরণ করে নিন।
  • সারাদিনের কাজ শেষে আপনি যখন ক্লান্তি অনুভব করবেন তখনি বিছানায় শুয়ে পড়ুন। এতে তাড়াতাড়ি ঘুম আসবে। ভালো ঘুমের জন্য ঘুমানোর আগে এক গ্লাস দুধ খেয়ে নিতে পারেন।
  • তাড়াতাড়ি ঘুমানোর ও ঘুম থেকে উঠার অভ্যাস গড়ে তুলুন। দেরি করে ঘুমালে ও ঘুম থেকে উঠলে আপনি বিষণ্ণতায় ভুগবেন। এটি আপনার জন্য হস্তমৈথুনের প্ররোচনা হিসেবে কাজ করতে পারে।
  • নিজেকে শান্ত রাখার জন্য লম্বা শ্বাস নিন। ঘুম না আসলে নাক দিয়ে দীর্ঘশ্বাস নিন এবং মুখ দিয়ে নিঃশ্বাস ছাড়ুন।
  • একদিকে (ডান) কাত হয়ে ঘুমান। এতে আপনি শান্ত হয়ে ঘুমাতে পারবেন। কারণ পেটের ওপর বা পিঠের ওপর ভর করে শুলে প্ররোচিত হয়ে হস্তমৈথুন করে বসতে পারেন।
  • সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠুন। দ্রুত বিছানা ছেড়ে দিন। কারণ, এই সময় শুয়ে থাকাও আপনাকে হস্তমৈথুনের দিকে নিয়ে যেতে পারে।

 

#teamFAD

COMMENTS

WORDPRESS: 0