ইচ্ছাশক্তি

ইচ্ছাশক্তি

অনেকদিন পর্ন থেকে মুক্ত থাকার পর হঠাৎ একদিন আবার দেখে ফেললে খুবই খারাপ লাগবে। এটাই স্বাভাবিক। এ অবস্থায় অনেকে হতাশ হয়ে যায়। ফলে তাদের ইচ্ছাশক্তি হারিয়ে যায় এবং তারা বারবার একই ভুল করতে থাকে। কিন্তু দেখুন, আল্লাহকে যে চেনে, প্রকৃত ইসলাম সম্পর্কে যে জানে, সে কিন্তু হতাশ হবে না। সে পাপের জন্য অনুতপ্ত হবে। সে জানে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইলে তিনি ক্ষমা করে দেন। পাপের মাধ্যমে আল্লাহর সাথে যে দূরত্ব ঘটেছিল, তওবা করে, পাপ না করার প্রতিজ্ঞা করে, আবার আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করা যায়। শুধু তা-ই না, তওবা করলে আল্লাহ্‌ আগের সব পাপকে, নেকিতে (সাওয়াবে) পরিণত করে দেন। আল্লাহ্‌ তা’আলা বলেন,

“কেউ তওবা করলে, ঈমান আনলে এবং সৎকর্ম করলে, আল্লাহ এরূপ লোকদের পাপরাশিকে পুণ্য দ্বারা পরিবর্তিত করে দেবেন। আল্লাহ অতি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।” (সূরা ফুরকান: ৭০)

এখন প্রশ্ন আসতে পারে, পর্নোগ্রাফি আসক্তি তো একটি আসক্তিকর পাপ। এটা বারবার ঘটে। কতোবার আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইব? এতোবার পাপ করার পর কি আল্লাহ্‌ আদও আমাকে ক্ষমা করবেন?

রসূল ﷺ বলেন,“এক বান্দা গুনাহ্ করল। তারপর সে বলল: হে আমার রব্ব (আল্লাহ্‌)! আমি তো গুনাহ্ করে ফেলেছি; আমাকে ক্ষমা করে দিন। তখন তার রব্ব বলেন: আমার বান্দা কি একথা জেনেছে যে, তার একজন রব্ব রয়েছে; যিনি গুনাহ্ মাফ করেন ও গুনাহর কারণে শাস্তি দেন। আমি আমার বান্দাকে মাফ করে দিলাম। এরপর আল্লাহর ইচ্ছায় কিছুকাল কেটে যায়। এরপর সে আবার আরেকটি গুনাহ করে। তিনি বলেন, তখন সে বলে: ও আমার প্রভু! আমি তো আরেকটি গুনাহ্ করে ফেলেছি; আমাকে মাফ করে দিন। তখন আল্লাহ্ বলেন: আমার বান্দা কি জেনেছে যে, তার একজন রব্ব আছেন; যিনি গুনাহ্ মাফ করেন ও গুনাহর কারণে শাস্তি দেন? আমি আমার বান্দাকে মাফ করে দিলাম। এরকম তিনবার বললেন [১]।”

ইমাম নববী ‘শারহে সাহিহ মুসলিম” গ্রন্থে (১৭/৭৫) বলেন:যদি কোন গুনাহ পুনঃপুনঃ শতবার করা হয় কিংবা হাজার বার করা হয় কিংবা এরচেয়েও বেশিবার করা হয় এবং প্রত্যেকবার গুনাহ থেকে তওবা করে তার তওবা কবুল করা হবে এবং তার গুনাহ মাফ হবে। আর যদি সকল গুনাহর পর একবার তওবা করে তাহলেও তার তওবা সহিহ হবে [২]।

তাই আশাহত হওয়ার কিছু নেই। তওবা করলে আল্লাহ্‌ আপনার গুনাহ মাফ করে দেবেন, এ আশা নিয়ে সামনে এগিয়ে যান। তাই বলে কখনোই এমনটা ভাববেন না যে, ‘আল্লাহ্‌ তো তওবা করলে মাফ করেই দিবেন। আমি যতো খুশি পাপ করতে পারি’। এ ধরণের মানসিকতা আপনাকে ব্যর্থদের অন্তর্ভুক্ত করবে। তাই আপনার লক্ষ্য থাকবে পাপ থেকে দূরে থাকা। যখনই পাপের চিন্তা মাথায় আসবে, তখনি আল্লাহর সাথে আপনার কৃত প্রতিশ্রুতির কথা মনে করবেন। আপনার ইচ্ছাশক্তি জাগ্রত হবে, ইনশা আল্লাহ্‌।

লিখেছেন: মিনহাজ মোহাম্মদ

রেফারেন্স:

[১] সহিহ বুখারি: ৭৫০৭
[২] যে ব্যক্তি নিভৃতে থাকলে গুনাতে লিপ্ত হয় এবং এর থেকে মুক্তি চায়, <https://islamqa.info/bn/answers/283715/>

COMMENTS

WORDPRESS: 0