পর্ন…মুক্তি মিলবেই

পর্ন…মুক্তি মিলবেই

প্রতিনিয়ত আমাদের পেইজে নক আসে- “আমি পর্ন এডিক্টেড, কীভাবে বের হবো?”, “আমার জীবন কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে পর্ন আর মাস্টারবেশন, আমাকে বাঁচান প্লিজ।” কিংবা “আমার স্বামী পর্ন এডিক্টেড, ওকে কীভাবে ফেরাবো?” এরকম শত শত মেসেজে আমাদের ইনবক্স ভর্তি।
.
এবারের একজন ভার্সিটি এডমিশন পরীক্ষার্থী আমাদের লিখেছে- “ভাই, আমি বুঝতেছিনা কি করব। অনেক চেষ্টা করার পরও ছাড়তে পারছি না। হস্তমৈথুন পর্নোগ্রাফি গিলে খাচ্ছে আমায়। এডমিশন পরীক্ষার্থী ভাই। জানুয়ারি-২১ বার, ফেব্রুয়ারি-১৩ বার, মার্চ-১৯ বার, এপ্রিল-১৫ বার, মে-১৭ বার, জুন-১৫ বার, জুলাই-১১ বার, আগস্ট-৮ বার হস্তমৈথুন করেছি। অনেক চেষ্টা করেছি ভাই কিন্তু ছাড়তে পারছি না।”
.
আমরা উত্তর দেওয়ার যথাসাধ্য চেষ্টা করি, জিজ্ঞেস করে সমস্যার শেকড় বোঝার চেষ্টা করি। সাহস যুগিয়ে, সমাধান বলে বোঝানোর চেষ্টা করি- পরিবর্তনের পথে ফিরে আসা সম্ভব।
.
চার্লস ডুহিগ তার বিখ্যাত বই “The Power of Habit” এ আলোচনা করেছেন কীভাবে একটি কাজ আমাদের অভ্যাসের অংশ হয়ে দাঁড়ায় এবং সেই অভ্যাস ক্ষেত্রবিশেষে এক সময় আসক্তিতে পরিণত হয়। একটা অভ্যাস গড়ে ওঠার পেছনে তিনটি ধাপ কাজ করে।
১. ট্রিগার
২. রিওয়ার্ড
৩. লুপ বা রুটিন
.
প্রথমে একটি ট্রিগার আমাদের কাজটি করতে আগ্রহী করে। পর্নের ক্ষেত্রে এ ট্রিগার হতে পারে এমন কাজ যা আমাদের বায়োলজিকাল চাহিদা বা আকর্ষণকে জাগিয়ে তোলে। হতে পারে রাস্তায় চলতে গিয়ে কোনো সুন্দরী মেয়েকে দেখা কিংবা অলরেডি যে পর্ন দেখে অভ্যস্ত তার ক্ষেত্রে দেখা যায় রুমে একাকিত্ব কিংবা স্রেফ মোবাইলও ট্রিগার হিসেবে কাজ করতে পারে।
.
এরপর ট্রিগার ফলো করে কাজটা করে ফেললে আমাদের মস্তিষ্ক ডোপামিন নি:সরণ করে সুখানুভূতি দেয় যা রিওয়ার্ড হিসেবে কাজ করে। এরপর এই প্রক্রিয়াটাই দীর্ঘদিন রুটিন বা লুপ আকারে পুনরাবৃত্তি হতে থাকলে এক সময় অভ্যাস বা এডিকশনে রূপ নেয়।
.
এডিকশন থেকে বেরোনোর জন্য দরকার ট্রিগারকে অকেজো করা। এজন্য পর্ন দেখার পথগুলো আইডেন্টিফাই করে বন্ধ করতে হবে। খুব বেশি এডিক্টেড হয়ে গেলে ক্লিনিকালি প্রেস্ক্রাইবড ওষুধ খেয়ে আকাঙ্ক্ষাগুলো ডিসেনসেটাইজ করারও দরকার হতে পারে। এভাবে ১২০ দিনের মত সময় পর্ন বা কোনো অভ্যাস থেকে দূরে থাকতে পারলে সেই অভ্যাসের শেকল ভেংগে বেড়িয়ে আসা সম্ভব।
.
আমরা এখনও স্বপ্ন দেখি একটি সুস্থ সমাজের। আমাদের ইনবক্সে যারা নক দেন তাদের মাঝে আমরা আশার আলো দেখি। তারা সমস্যাকে সমস্যা বলে বুঝতে পেরেছে। আমরা চেষ্টা করছি তারা সমস্যা থেকে বেরিয়ে আসুক। শুধু তাই নয়, তারা যেন অন্যদের সমস্যা থেকে বাঁচাতে চেষ্টা করে সে আশাও আমরা রাখি।
.
আমরা এখনও স্বপ্ন দেখি এমন এক সমাজের যেখানে মানুষ লজ্জাশীল হবে ঘরের বাইরে এবং ভেতরে- একাকী অবস্থাতেও তারা কারও লজ্জাস্থান নিজের লজ্জার মাথা খেয়ে অবৈধভাবে দেখবে না। আসুন, আমরা প্রত্যেকে নৈতিকতা ও শালীনতার বাহক হই। একটি সভ্য ও শালীন সমাজ গড়ে তুলি।
.
#পর্নকে_না_বলি
#teamFAD

COMMENTS

WORDPRESS: 0